কিভাবে অ্যামাজন কোম্পানি 438 বিলিয়ন ডলারে পৌঁছালো সেটির গল্প এখন আমরা জানবো। নিজের বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু অ্যামাজনের, আজ সবার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন বেজ়োস।
বিষয় তালিকা
জেফ বেজোস এর ইতিহাস
জেফ বেজোস যাকে আমরা বর্তমানে অ্যামাজন কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে জানি তার শুরুটা হয় অনেকটা এরকম। ১৯৯০ সালে পৃথিবীর ইতিহাসে বিরাট পরিবর্তন হতে শুরু করে। নতুনভাবে পৃথিবীর সবদিক দিয়ে বিকাশ হতে শুরু করে।
সেই সময় জেফ বেজোস কাজ করতেন একটি ব্যাংকে। যেহেতু তিনি ব্যবসায়ী সেক্টরের সাথে যুক্ত ছিলেন সেই জন্য তার মাথায় কিছু নতুন চিন্তা ভাবনা এল। তিনি ভাবলেন ইন্টারনেটে দ্বারা বই বিক্রি করবেন। তারপর থেকেই আরো অনেক অনেক জিনিস তার ব্যবসা তে তিনি যোগ করলেন।
এরপর থেকে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ আমরা সুন্দরভাবে আলাদা আলাদা জেনে নেব।
Read- ইক্ষু এবং কার্পাস উৎপাদনে অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।
Domain কিনলেন অনলাইনে business এর জন্য
1995 সালের আগে জেফ বেজোস 10 টির বেশি ডোমেইন কিনলেন। প্রত্যেকটি ডোমেইন নির্দিষ্ট কিছু দ্রব্য বিক্রি করার জন্য ব্যবহার হতে শুরু করল। তবে এখানে একটি সমস্যা এসে দাঁড়ায়। তিনি প্রথমবার ঠিক করেছিলেন বই বিক্রি করবেন অনলাইনে।
তার ব্যবসাটি এগোতে শুরু করলো কিন্তু গ্রাহক তার কোম্পানির নাম ঠিক ভাবে বুঝতে পারছিল না। তার কারণ সেই সময় তার কোম্পানির নাম ছিল ‘CADABRA’ । তারপর তিনি আরেকটি বড় পদক্ষেপ নিলেন তার অনলাইন বিজনেস এর যাত্রা পথে।
CADABRA এর নাম পরিবর্তন করে হলো AMAZON
যেহেতু গ্রাহকরা তার কোম্পানির নাম সঠিকভাবে বুঝতে পারছিল না সে জন্য তিনি তার কোম্পানির নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিলেন। এখান থেকে যাত্রা শুরু হয় অ্যামাজন কোম্পানির। তিনি তার কোম্পানির নাম বদলে রাখলেন অ্যামাজন।
এই নামটি সহজলভ্য হওয়ায় গ্রাহকরা সহজেই নামটি বুঝতে পারছিল এবং মনে রাখতে। নাম পরিবর্তনের ফলে তাদের ব্যবসায় আরো বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যেতে শুরু করল।
কেন জেফ বেজোস কোম্পানির নাম রাখেন অ্যামাজন?
যেহেতু তার পুরনো কোম্পানি সঠিকভাবে আমন্ত্রিত হয়নি সেই জন্য তিনি নাম বদল করলেন। অ্যামাজন কোম্পানি নাম হওয়ার পিছনে কতগুলো কারণ ছিল। প্রথমত এই নামটি সাথে গ্রাহকরা খুবই পরিচিত।
অ্যামাজন নামে পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় জঙ্গল এবং একটি বিখ্যাত নদী রয়েছে ইউরোপ মহাদেশ। তিনি চাইছিলেন তার ব্যবসা পৃথিবীর ভিতরে সবচেয়ে বড় হবে এবং পরিচিত হবে সেটাই ছিল তাঁর অ্যামাজন নাম রাখার প্রধান কারণ।
সাথে সাথে আরেকটি সুবিধা পাওয়া গেল গ্রাহকরা খুব তাড়াতাড়ি নামটির সাথে নিজেকে যুক্ত করতে পারছিল।
আরো পড়ুন – কিভাবে সমস্ত পড়াশোনা মনে রাখা যায়? Fast way of Learning Anything
কি কি বিক্রি হতো প্রথম অ্যামাজন অনলাইন ওয়েবসাইটে?
প্রথমদিকে কোম্পানির মালিক জেফ বেজোস শুধুমাত্র বই বিক্রি করতেন। পুরানো এবং নতুন বই পাওয়া যেত তার অনলাইন স্টরে। ধীরে ধীরে তিনি অনেকগুলো পরিবর্তন করে তার অনলাইন স্টরে। পরিবর্তন শুরু হয়ে যায় 2000 সালের আগে।
অ্যামাজন কোম্পানির পরবর্তীতে কি কি বিক্রি করতে শুরু করলো?
90 দশকের পর থেকেই অ্যামাজনের 500 মিলিয়ন ডলার কোম্পানি গড়ে উঠেছিল। জেফ বেজোস ঠিক করলেন আর অন্যদিকে তার ব্যবসা কে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। বই বিক্রির সাথে সাথে তিনি হোস্টিং সার্ভিস দিতে লাগলেন।
অ্যামাজন নিজের অনলাইন ডিজিটাল রিডিং ডিভাইস তৈরি করলেন যার নাম Kindle। তিনি তারপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত পৃথিবীর যাবতীয় জিনিস তার ওয়েবসাইট অ্যামাজনে বিক্রি করছেন। সমস্ত দ্রব্য কিন্তু অ্যামাজন এর সাইডে কিনতে পাওয়া যায়।
অ্যামাজনের ওয়েব সার্ভিস (AWS) কোন কোন বড় কোম্পানি ব্যবহার করেন?
পৃথিবীর অন্যতম সফল ব্যবসায়ীরা কিন্তু বর্তমানে অ্যামাজনের হোস্টিং সার্ভিস ব্যবহার। এই হোস্টিং সার্ভিস থেকে অ্যামাজনের সবচেয়ে বেশি লাভ হয় বর্তমান সময়ে।
ফেসবুক নেটফ্লিক্স টুইটার এবং আরো অনেক বড় কোম্পানি অ্যামাজন ওয়েব হোস্টিং ব্যবহার করেন।
কেন অ্যামাজন এতটা সফল হল?
এই প্রশ্নের অনেকগুলো উত্তর রয়েছে, রয়েছে অনেক কারণ। সব কারণগুলি একে একে আমরা জেনে নেব। অ্যামাজনের সফল হওয়ার সবচেয়ে বড় এবং প্রধান কারণ হলো, অ্যামাজন কোম্পানি যে জিনিসের উপরে ব্যবসা শুরু করেছিলেন।
সেই জিনিসে অন্য কোন কোম্পানি এর আগে ব্যবসা শুরু করেন নি। এর ফলে দেখা গিয়েছে অ্যামাজন সেই জায়গার প্রধান এবং প্রথম পথপ্রদর্শক। এই জিনিসটি অ্যামাজন কে অনেক এগিয়ে রেখেছে বাকি সফল কোম্পানির তুলনায় এবং পৌঁছে দিয়েছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বড় কোম্পানি। আরো কতগুলো কারণ রয়েছে সেগুলো
আমরা একবার জেনে নেব। অ্যামাজন কোম্পানি বড় হওয়ার পিছনে আরেকটি বড় কারণ হল নিজে নিজে। যেহেতু তিনি বিজনেস অরিয়েন্টেড ছিলেন সেহেতু তিনি বিভিন্ন বিষয়কে জানতে। ব্যাংকের কর্মচারী হয় তিনি টাকা পয়সার ব্যাপারটা খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে ফেলতে পারতেন। এটাই তার ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
কোন কোন জিনিসে অ্যামাজন কোম্পানি ব্যর্থতার শিকার হয়েছে?
2014 সালে অ্যামাজন প্রথম স্মার্টফোন বাজারে আনে। এই স্মার্টফোনটি ব্যাপকভাবে ধাক্কা খায় বাজারে। এটাই আমাজনের প্রথম অসফল প্রডাক্ট।
কারণ এর আগেই অ্যাপেল কোম্পানি 2007 সালে আইফোন লঞ্চ করে দেন। 2008 সালে এন্ড্রয়েড ফোনে বাজারে চলে আসে। অ্যামাজন কোম্পানি এই ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে পড়ায় নিজেদের ফোন বাজারে ভালো ফল করতে পারেন না।
আরো পড়ুন – অনলাইনে Mobile দিয়ে টাকা ইনকাম করার 20 টি উপায়
Kindle কিভাবে এতটা পরিচিতি পেলো?
Kindle হলো অ্যামাজনের অন্যতম সফল প্রোডাক্ট। এখানে ডিজিটালে বই পড়ে যাবে। বাজারে অ্যামাজন এই জিনিসটা থেকে অনেকটা লাভ করেছে।
কারণ এর আগে এরকম প্রযুক্তি বাজারে আসেনি ফলে অ্যামাজন প্রচন্ড পরিমাণের সফল হয়েছে এই ই-রিডার পরিকল্পনায়।
ফ্লিপকার্ট এবং অ্যামাজনের প্রধান পার্থক্য ভারতীয় বাজারে
2007 সালে প্রথম ফ্লিপকার্ট ভারতবর্ষে লঞ্চ হয়। তার অনেক বছর পরে অ্যামাজন ভারতবর্ষে আসে। এর ফলে ফ্লিপকার্ট কোম্পানি অনেকটা এগিয়ে থাকে অ্যামাজন সহ বাকি ই-কমার্স কোম্পানির থেকে।
বর্তমানে ফ্লিপকার্ট অ্যামাজন কোম্পানি থেকে তিনগুণ বেশি অর্থ উপার্জন করে। অ্যামাজন কোম্পানির ভারতীয় বাজারে 30% দখল রয়েছে। অনলাইন দ্রব্য বিক্রেতা অ্যামাজনের থার্টি পার্সেন্ট বিক্রি হয়। তবে বর্তমানে অ্যামাজন কোম্পানি ভারতের বাজারে অনেকটাই সফল হয়েছে।
কিভাবে অ্যামাজনের এত গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে গেল?
অ্যামাজন কোম্পানির গ্রাউন্ড সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো অ্যামাজন খুবই কম দামে তাদের জিনিস বিক্রি করতে শুরু করেছিল। সেই কারণে বেশি গ্রাহক তাদের অনলাইনে স্টোর থেকে জিনিস কিনছিল।
এর ফলে বেশিরভাগ বই প্রকাশনী অ্যামাজন অনলাইন স্টরে তাদের বই বিক্রি করতে চাইল। দেখা গেল অ্যামাজন এস্টোর আরো বেশি ধরনের বই পাওয়া যাচ্ছে। এখান থেকে দর্শকও অনেকটা আগ্রহ দেখালো এবং অনেক ধরনের বই পাওয়ার জন্য অ্যামাজন অনলাইন স্টরে তারা আসতে শুরু করলো। এইভাবে ধীরে ধীরে অ্যামাজন নিজের গ্রাহক সংখ্যা বাড়িয়ে ধরল।
শুধু বই নয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিন্তু অ্যামাজন এই একই পরিকল্পনাকে ব্যবহার করে নিজের কোম্পানিকে সমৃদ্ধ করেছে।
Stay connected for more information
অ্যামাজন কোম্পানি এর business মডেল?
বর্তমানে অ্যামাজন কোম্পানি 3p মডেল ব্যবহার করে। তারা নিজেদের কাছে কোন দ্রব্য স্টোর করে রাখে না। তারা একটি অনলাইন প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
ক্রেতা এবং বিক্রেতা ভিতর একটি যোগাযোগ স্থাপন করা হলো অ্যামাজনের প্রধান বিজনেস মডেল। Amazon সোজাসুজি বিক্রেতা থেকে ক্রেতাদের ঠিক সময়ে সুন্দর প্যাকেট করে জিনিস বিক্রি করতে সাহায্য করে। এই সমস্ত দ্রব্য নির্দিষ্ট বিক্রেতার কাছে থাকে।